জামেয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া শামিমাবাদ, সিলেট
পরিচিতি
শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড, উন্নতির সোপান। সুশীল সমাজ বিনির্মাণের চাবিকাঠি, সুন্দর সমাজ গড়ার পূর্বশর্ত, সকল প্রকার অসভ্যতা দূর করার হাতিয়ার। তবে নিঃসন্দেহে তা মানব রচিত কোন শিক্ষাব্যবস্থা নয়, বরং একমাত্র খোদাপ্রদত্ত কুরআন-সুন্নাহর সহীহ তালীমই হচ্ছে মানুষের ইহকালীন ও পরকালীন সফলতার অন্যতম সহায়ক। যে তা’লীম পবিত্র মক্কা নগরীর হেরা গুহা থেকে সূচনা হয়ে তার স্নিগ্ধ জ্যোতি বিকিরণে গোটা মানবমন্ডলীকে মুগ্ধ করেছিল। বিশ্ব ধরণীকে উপহার দিয়েছিলো সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ সভ্যতা। যা স্বয়ং আল্লাহপাক হযরত জিব্রাইল আ. এর মাধ্যমে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা. কে শিক্ষা দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে রাসূল সা. শিক্ষকরূপে মুসলিমদেরকে পবিত্র কুরআনের বাণী শিক্ষা দিতে শুরু করলেন। এ মর্মে তিনি ঘোষণা করলেন, ‘আমাকে শিক্ষক হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে’। রাসূল সা. তার মক্কী জীবনে অত্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশেও প্রায় ১৩টি কেন্দ্রে ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা চালু রেখেছিলেন। হিজরত করে মদিনায় আসার পর মসজিদে নববীর ‘সূফফা’ নামক স্থান থেকে ইসলামী শিক্ষার স্রোতধারাকে আরো বেগবান করে তোলেন।
খোলাফায়ে রাশেদীন তথা ইসলামের স্বর্ণালী যুগের সূচনালগ্ন থেকে তুর্কি খেলাফতের শেষ আমল পর্যন্ত গোটা মুসলিম বিশ্বে ইসলামী শিক্ষাই ছিল একমাত্র শিক্ষাব্যবস্থা এবং ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিতরাই ছিল সমাজে সর্বজন স্বীকৃত, গুণী ও আদর্শবান।
১৩০০ ঈসায়ি সনের শুরুর দিকে সুলতান কুতুবুদ্দীন আইবেকের শাসনামলে ভারত উপমহাদেশে প্রচলিত ক্বওমি মাদরাসা শিক্ষার সূচনা হয়। মুলতানের গভর্ণর নাসিরুদ্দীন কুবাচাহ মুলতানের ‘উচ্ছ’ নামক স্থানে ‘মাদরাসায়ে ফিরোজি’ নামে একটি ক্বওমী মাদরাসা স্থাপন করেন। পরবর্তীকালে সমগ্র ভারতবর্ষে বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য অগণিত ক্বওমী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়।
বাংলাদেশে ইলমে হাদীসের সূচনা:
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, বাংলাদেশে ইলমে হাদীসের সূচনা হয়, বীর সেনানী ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজী রহ.-এর নেতৃত্বে বঙ্গ বিজয়ের পূর্বেই। ছয়শত হিজরীর সূচনালগ্নে একদল সাধকের আগমন ঘটে। সেসব আগন্তুকদের মধ্যে অন্যতম হলেন: শাহজালাল তিবরিজী (মৃত্যু ৬৪২ হিজরী), শায়খ শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামা, শায়খ আলাউল হক, শায়খ নূর কুতুব, শায়খ শাহজালাল ইয়ামনী (যিনি সিলেটে সমাহিত হন), শায়খ আহমদ তাননূরী, শায়খ বদরুদ্দীন, শায়খ মুহাম্মদ ইবনে ইয়াজদানে বখশ, শায়খ ফরীদ ও শায়খ মুমীনুল্লাহ রহ. সহ আরো অনেক মুহাদ্দিসীন ও সূফিয়ায়ে কেরাম।
মূলত: তাদের আগমনের পর থেকে এদেশে ব্যাপকভাবে ইসলামের প্রচার-প্রসার শুরু হয় এবং এ লক্ষ্যে বহু মনীষীর একের পর এক আগমন ঘটে এ মাটিতে। তারা একদিকে যেমন নিজেদের মধুর ব্যবহার ও ইসলামের অমীয় বাণী প্রচার করে জনগণের হৃদয় জয় করতে থাকেন। অপরদিকে তারা ধর্মীয় শিক্ষা-দীক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠা করেন বিভিন্ন দ্বীনি শিক্ষালয়, মক্তব ও খানকাহ। ক্রমেই সেগুলো হয়ে ওঠে কুরআন ও হাদিস সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান লাভ ও ইসলামের কেন্দ্রে। এভাবে এ অঞ্চলে ক্রমান্বয়ে ইলমে হাদীসের সুবাতাস প্রবাহিত হয়।
শিক্ষাবিভাগ
আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ
ফরীকে আউয়াল: নাহু-সরফে দূর্বল, শুদ্ধ করে আরবী ইবারত পড়তে অক্ষম এমন ছাত্রদের জন্য “আরবী ভাষা ও নাহু-সরফের সমন্বয়ে” এই [...]
কিতাব বিভাগ
এ বিভাগটিতে মক্তব চাহারম থেকে ফযীলত ২য় তথা মিশকাত শরীফ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে শ্রেণীভিত্তিক পাঠদান ব্যবস্থা চালু রয়েছে। যেখানে রাত-দিন সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিরলসভাবে মেহনত করে যাচ্ছেন একঝাঁক তরুণ আলেমে দ্বীন।
হিফজুল কুরআন
অভিজ্ঞ হাফেজ সাহেবানের সার্বক্ষণিক নিবীড় তত্ত্ববধানে সাধারণত মাত্র তিন বছরে পূর্ণ কুরআন মাজিদ মুখস্ত করানো হয়, সাথে সাথে দৈনন্দিন পঠিতব্য মাসনূন দুআ ও নামাযের গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা মাসায়েল সহজ পদ্ধতিতে শিখানো হয়
নুরানী বিভাগ
এ বিভাগে নূরানী তা’লীমুল কুরআন বোর্ডের অধীনে শিশু শ্রেণী থেকে ১ম, ২য় ও ৩য় শ্রেণী পর্যন্ত দক্ষ-ট্রেনিংপ্রাপ্ত শিক্ষকমণ্ডলী দ্বারা সহীহ-শুদ্ধভাবে কুরআন শরীফ তেলাওয়াত, আমপারা ও অর্থসহ ৪০টি হাদীস মুখস্ত করানো হয়। পাশাপাশি অত্যাবশ্যকীয় মাসআলা-মাসাইলসহ প্রাথমিক বাংলা, উর্দূ, গণিত, ইংরেজী ইত্যাদিও যত্নের সাথে শেখানো হয়।
কম্পিউটার কোর্স
দ্বীনের দাওয়াত জনসাধারণ্যে পৌঁছে দেয়ার মহান উদ্দেশ্যে এবং আধুনিক যুগ চাহিদা পূরণে দক্ষ জনশক্তি তৈরীর লক্ষ্যে শিক্ষকমণ্ডলীর তত্ত্বাবধানে কম্পিউটার [...]