আবু সুফিয়ান নাছিম: গতকাল ১২ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রোজ শুক্রবার জামেয়া শামীমাবাদে আগমন করেন দারুল উলুম দেওবন্দের উস্তাযুল হাদীস ওয়াল ফিকহ ও নাইবে আমীরুল হিন্দ আল্লামা সায়্যিদ সালমান মনসুরপুরী দা.বা.। বাদ মাগরিব জামেয়ার মাদানী মসজিদ কমপ্লেক্সে জামেয়ার তাকমীল ফিল হাদীসের ছাত্রদেরকে তিনি সহীহ বুখারীর দরস প্রদান করেন।
হযরত তাঁর বয়ানে বলেন: “শামীমাবাদ মাদরাসা তালীম ও তারবিয়াতের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী একটি প্রতিষ্ঠান। কয়েক বছর থেকে আমি যখনই বাংলাদেশ সফরে আসি, তখন এই মাদরাসায়ও আমার আসার সুযোগ হয়। খুশির বিষয় হলো—যখনই এখানে আসি, পূর্বের তুলনায় উন্নতি ও অগ্রগতির খবর শুনতে পাই। এই বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। আজ আমার আনন্দ হচ্ছে যে, অল্প দিনের ব্যবধানে ছোট্ট এই জামেয়া আজ একাডেমিক শিক্ষাস্তরের সর্বোচ্চ জামাত তাকমীল ফিল হাদীসে উন্নীত হয়েছে এবং দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন আসাতিযায়ে কেরাম এখানে খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। বাহ্যিক কাঠামোগত যথেষ্ট উন্নতির পাশাপাশি তালীম ও তারবিয়াতের ক্ষেত্রেও এই জামেয়া “ক্বাবিলে রাশক দরজা” তথা ঈর্ষণীয় অবস্থানে রয়েছে। দোয়া করি—আল্লাহ তা’আলা যেন মাদরাসার যাহেরী-বাতেনী আরো উন্নতি দান করেন।”
পরে তিনি হাদিস শাস্ত্রের গুরুত্ব, ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ এর জীবনীর গুরুত্বপূর্ণ দিক, হাদিস শাস্ত্রের বর্ণনাকারীদের জীবনবৃত্তান্ত তথা আসমাউর রিজালের বিষয়, সনদের গুরুত্ব এবং হাদিসের বিভিন্ন স্তর নিয়ে আলোচনা করেন। পরে বুখারী শরীফের সর্বপ্রথম অধ্যায় এর উপর সংক্ষিপ্ত অথচ সমৃদ্ধ আলোচনাও করেন।
জামেয়ার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম হাফিয মাওলানা সৈয়দ শামীম আহমদ সাহেবের সভাপতিত্বে মজলিসে উপস্থিত ছিলেন কাজিরবাজার মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুস সুবহান সাহেব, আযাদ দীনী এদারা বোর্ডের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল বছীর সাহেব, কাজিরবাজার মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আশিকুল ইসলাম সালেহপুরী, মুফতী রশিদ মকুবল সাহেব, জামেয়ার শায়খুল হাদীস মুফতী হারুনুর রশীদ সাহেব সহ বিভিন্ন মাদরাসা থেকে আগত উলামায়ে কেরাম, জামেয়ার আসাতিযা-তালাবা, আজীবন সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দ।
হযরতের বয়ানের শুরুতে জামেয়ার সদরুল মুদাররিসীন মুফতী সায়েম কাসেমী বলেন: সূচনালগ্ন থেকেই হযরতের দোয়া ও নেক দৃষ্টি সব সময়ই এই মাদরাসার প্রতি ছিল। এই বছর দাওরায়ে হাদিস ইফতিতাহের ব্যাপারেও হযরতের সাথে পরামর্শ করা হয়েছিল। হযরত বলেছিলেন ‘‘যদি জায়গার ব্যবস্থা হয়ে যায় তাহলে শুরু করো, ভালো হবে’’। হযরতের পরামর্শের পরই মূলত দাওরায়ে হাদিস খোলার সাহস আসে। এরপর তিনি জামেয়ার বিগত শিক্ষাবর্ষের ছাত্রসংখ্যা ও বোর্ড পরীক্ষার ফলাফলের সংক্ষিপ্ত পরিসংখ্যান পেশ করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, গত বছর মাদ্রাসার ছাত্র সংখ্যা ছিলো ৬১৫ জন। তন্মধ্যে বোর্ড পরীক্ষা ও বার্ষিক পরিক্ষায় ৩৬৯ জন মুমতাজ (A+) পেয়েছে। এই বছর মোট ছাত্র সংখ্যা ৭৫৫ জন, এবং উস্তাদ ৪৩ জন। রিপোর্ট শুনে হযরত অত্যন্ত আনন্দিত হন এবং মাদরাসার তারাক্কীর জন্য দোয়া করেন।
মুফতী সায়্যিদ সালমান মনসুরপুরী দা.বা. এর দোয়ার মাধ্যমে মজলিসের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
Leave A Comment